একদিন রাসুল (সঃ) সাহাবায়ে কিরাম পরিবেষ্টিত অবস্থায় বসে আছেন। এমন সময় আসমা’ বিনত ইয়াযিদ আল-আনসারিইয়্যা (রা) এলেন এবং রাসুলুল্লাহকে (সঃ) সম্বোধন করে ছোট-খাট এ ভাষণটি দিলেন:
“হে আল্লাহর রাসুল! আমি একদল মুসলিম মহিলার পক্ষ থেকে তাদের কিছু কথা বলার জন্য এসেছি। আল্লাহ তা’আলা আপনাকে নারী-পুরুষ উভয় জাতির জন্য পথপ্রদর্শক করে পাঠিয়েছেন। আমরা মহিলারা আপনার উপর ঈমান এনে আপনার অনুসারী হয়েছি। কিন্তু নারী ও পুরুষের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান আমরা লক্ষ্য করি। আমরা গৃহের চৌহদ্দির মধ্যে আবদ্ধ। পুরুষের যৌন তৃপ্তি পূরণ করি এবং তাদের সন্তান্দের ধারণ করি। আর আপনারা পুরুষরা জুম’আ, নামাজের জামা’আত ও জানাযায় শরীক হতে পারেন। হজ্জে যান। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আপনারা আল্লাহর পথে জিহাদে চলে যান। আর আমরা তখন আপনাদের সন্তানদেরকে লালন-পালন করি, ধনসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ করি, কাপড় তৈরির জন্য চরকায় সূতা কাটি। আমাদের প্রশ্ন হলো, আমরা কি আপনাদের সওয়াবের অংশীদার হবো না? আমার পিছনে যে সকল মহিলা আছেন। তাদেরও আমার মত একই বক্তব্য ও একই মত।”
রাসুল (সঃ) আসমা’র বক্তব্য শোনার পর সাহাবীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন: তোমরা কি এর চেয়ে আরও সুন্দর করে দ্বীন সম্পর্কে জানতে চায় এমন কোন মহিলার কথা শুনেছো? তাঁরা বললেন: আমাদের তো ধারণাই ছিল না যে, একজন মহিলা এমন প্রশ্ন করতে পারেন। তারপর রাসুল (সঃ) আসমা’কে লক্ষ্য করে বললেন: “নারী যদি তার স্বামীর সাথে সদাচরণ করে, তার মন যুগিয়ে চলে, তার ইচ্ছা-অনিচ্ছামত আনুগত্য করে এবং দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব-অধিকার পূরণ করে তাহলে সেও পুরুষের সমান প্রতিদান লাভ করবে। যাও, তুমি একথা তোমার পিছনে রেখে আসা অন্য নারীদেরকে বলে দাও।”
রাসুলুল্লাহর (সঃ) মুখ থেকে এ সংবাদ শুনে আসমা’ আনন্দের সাথে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘আল্লহু আকবার’ পাঠ করতে করতে ফিরে যান।