আমাদের অনেকেরই ধারণা সিয়াহ সিত্তাহ ছাড়া মনে হয় আর কোন হাদিসের কিতাব নেই | আবার অনেকেই মনে করেন সহি হাদিসের কিতাব মনে হয় এই সিয়াহ সিত্তাহর ৬ টি কিতাবই | আমাদের জানার অভাব ও ইলমের পরিধির অভাবের কারণেই এরকম মনে হতে পারে বা মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক কেননা আল্লাহ সবাইকে সমান ইলম দান করেন নি |
এখন মূল কথায় আসি | এই সিয়াহ সিত্তাহর কিতাব মিলিয়ে সর্বমোট হাদিস হবে প্রায় ২৮০০০ এর মত | আবার অনেক হাদীসই কয়েকবার একই কিতাবে বা অন্যান্য কিতাবে এসেছে | সেক্ষেত্রে স্বকীয়তা বিবেচনা করলে সর্বমোট হাদিস থেকে হাদিসের সংখা আরো কমে যাবে | অনেকগুলা উদাহরণ দিতে চাই না তাই আমি শুধু একটা উদাহরণই দেবো | ঈমাম বুখারীর সংগ্রহে ছিল প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ হাদিস | তিনি বলেন তার মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ হাদিস ছিল সনদ সহ সহি | কিন্তু তিনি যে বুখারী শরীফ সংকলন করেছেন সেখানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার সহি হাদিস সংকলিত হয়েছে | সেই সাড়ে ৭ হাজার হাদিসে অনেক হাদীসই বিভিন্ন অধ্যায়ে বারবার এসেছে | সুতরাং এখানেও সর্বমোট হাদিস থেকে অনেক হাদিস কমে যায় | এখন আপনাদের বিবেক নামক আদালতের কাছে আমার প্রশ্ন ঈমাম বুখারীর বাকি ৯৩০০০ বা তারও বেশি সহি হাদিস গেল কোথায় ? সিয়াহ সিত্তাহর সব হাদিস যোগ করলেও বাকি ৭৫০০০ হাদিস গেল কোথায় ?
এখন আসি অন্য কথায় ? আজকাল অনেক ভন্ড জাহেল মুর্খ মৌলভি ও তাদের কিছু অন্ধ অনুসারীদেরকে প্রায় বলতে শুনি এই হাদিসটা জইফ বা দুর্বল | আবার বলে সিয়াহ সিত্তাহ ছাড়া হাদিস মানিনা | হয়তো অনেক হাদীসই বর্ণনাকারীর কারণে মূল সনদ হতে দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু প্রকৃত পক্ষে হাদিসটা সহি সে বিষয়ে সন্দেহ নেই | কেননা নূর নবীজির পবিত্র জবান মোবারকের কথা কখনই দুর্বল হতে পারেনা | আর জেনে রাখুন কোনো বাক্তি যদি হাদিসকে জইফ বলে ফতুয়া দেন সেই বাক্তির কমপক্ষে ৫০০০০ হাদিস সনদ সহ মুখস্থ থাকতে হবে | তাই সবাই হাদিসকে জইফ বলার যোগ্যতা রাখেন না | এখন আপনারাই চিন্তা করেন কেউ যদি হাদিসকে জইফ বলে ফতুয়া দেয় সেটা কি গ্রহণযোগ্য হবে ? যে বেচারা মাদ্রাসার বারান্দায় যেতে পারেনি সে আসে জইফ হাদিসের ফতুয়া দিতে ? এটাকে পাগল না মুর্খ না গাধা বলবেন আপনারা ?
বুখারী , মুসলিম , তিরমিজী , মিশকাত , আবু দাউদ ও নাসাই শরীফের মত আরো কমপক্ষে ৫০ টির অধিক সহি হাদিসের কিতাব রয়েছে | আপনাদের খেদমতে সেই কিতাবগুলার তালিকা নিচে পেশ করলাম :
(১) সহীহ্ ইবনে খোযায়মা,
(২) সহীহ্ ইবনে হাব্বান,
(৩)সহীহ্ ইবনে ওয়ায়না,
(৪)সহীহ্ ইবনুস সাকান,
(৫)সহীহ্ মোন্তাকা,
(৬) মুখতাসারেজিয়াহ্,
(৭)সহীহ্ জুরকানী,
(৮)সহীহ্ ইসফেহানী,
(৯) সহীহ্ ইসমাঈলী,
(১০) মোস্তাদরেক ইবনে হাকিম,
(১১) মসনদেইমাম আযম,
(১২) মুওয়াত্তায়ে ইমামমালেক,
(১৩) মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহম্মদ,
(১৪) কিতাবুল আছার,
(১৫) কিতাবুল খেরাজ,
(১৬) কিতাবুল হেজাজ,
(১৭) কিতাবুল আ’মালী,
(১৮) মসনদে শাফেয়ী,
(১৯) মসনদে আবূ ইয়ালী,
(২০) মসনদে আব্দুর রাজ্জাক,
(২১) মোছান্নেফে আবূ বকর ইবনে আবী শায়বা,
(২২) মসনদে আবদ ইবনে হুমায়েদ,
(২৩) মসনদে আবূ দাউদ তায়লাসী,
(২৪) সুনানে দারে কুতনী,
(২৫) সুনানে দারেমী,
(২৬) সুনানে বায়হাক্বী,
(২৭) মা’রেফাতু সুনানে বায়হাক্বী,
(২৮) মা’য়ানিয়ূল আছার-তাহাবী,
(২৯) মুশফিক্বিয়ুল আছার-তাহাবী,
(৩০) মু’জামুল কবীর-তিবরানী,
(৩১) মু’জামুল আওসাত-তিবরানী,
(৩২) মু’জামুস সগীর-তিবরানী,
(৩৩) কিতাবুল ই’তিকাদ্,
(৩৪) কিতাবুদ্ দোয়া,
(৩৫) মসনদে হারেস ইবনে উমামা,
(৩৬) মসনদে বাজ্জাজ,
(৩৭) সুনানে আবী মুসলিম,
(৩৮) সুনানে সাঈদ বিন মনছুর,
(৩৯) শরহুস্ সুন্নাহ,
(৪০) শেফা,
(৪১) হুলইয়া,
(৪২) তাহযীবুল আছার ও
(৪৩) আল মুখাতারা