কখনো কখনো নানা কারণে আমরা এমন সব অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সম্মুখীন হই যেখানে নিজেকে অনেক দুর্বল ও অসহায় মনে হয়।
-দু:শ্চিন্তায় মাথা হ্যাং হয়ে যায়।
-আশঙ্কায় ছোট্ট বুক দূরদূর করে কাঁপতে থাকে।
বুকের ভেতর একরাশ বেদনা বরফের মত জমা হয়ে লোনা জল হয়ে বের হয়ে আসে দু চোখ বেয়ে।
কোন কোন হতভাগা তো জীবনটাকেই নি:শেষ করে দেয়ার বা আত্ম হত্যা করার জঘন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে!
কিন্তু কথা হল, এমনভাবে হতাশ হওয়া কি মুমিনের সাজে ?
দয়াময় আল্লাহর প্রতি তাহলে আমরা কেমন বিশ্বাস পোষণ করি ?
তার দয়া ও করুণার প্রতি কি আমাদের বিশ্বাস নেই ?
বাস্তবতা হল, এমন অসহায় মন নিয়ে যদি আমরা আল্লাহর শরণাপন্ন হই…তার দরবারে নিজের প্রয়োজনটা তুলে ধরতে পারি..তার রহমত ও করুণার কথা মনে করে আশায় বুক বেঁধে সামনে চলার চেষ্টা করি তবে আল্লাহ রহমত মেঘের মত এসে আমদের উপর ছায়া দেয়া শুরু করে। হতাশা অন্ধকার কাটতে শুরু করে।
সম্ভাবনার উজ্জ্বল বিভাগুলো ভোরের আলোর মত মনের কোনে ফোটতে শুরু করে। আর এটাই প্রকৃতপক্ষে মুমিনের করা উচিৎ।
কারণ, আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে আমাদেরকে তার রহমত ও করুণা থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছে। তিনি বলেন:
“তোমরা আল্লাহর দয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়ো না।” (সূরা আয-যুমার: ৪৯-৫৬)
শুধু তাই নয়। হতাশ হওয়াকে কাফেরদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন:
তিনি বলেন:
”নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।” (সূরা ইউসুফ: ৮৭)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! যতক্ষন পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকতে থাক এবং আমার আশা পোষণ করতে থাক সে পর্যন্ত আমি তোমাকে মার্জনা করতে থাকি, তোমার যত পাপই হোক না কেন। আর আমি কোন ভয় করি না। হে আদম সন্তান! যদি তোমার পাপরাশি আসমান পর্যন্তও পৌছে, তারপর তুমি আমার কাছে মাফ চাও, আমি তোমাকে মাফ করে দিই এবং আমি কাউকে গ্রাহ্য করি না।”
“হে আদম সন্তান! যদি তুমি আমার কাছে পৃথিবী পরিমাণ পাপ নিয়ে আস আর আমার কোন অংশী স্থির না করে আমার সাথে সাক্ষাত কর, নিশ্চয়ই আমি সে পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।” ( তিরমিযী, তিবরানী ও বায়হাকী)
সুতরাং হতাশা নয়। হতাশার সাগরে আশার নুড়ি পাথরগুলো দিয়ে সেতু রচনা করুন। মহান আল্লাহর নিকট সব প্রয়োজন তুলে ধরুন। তিনি অবশ্যই সমাধানের পথ বের করে দিবেন। কারণ, তিনি আমাদের একমাত্র আশ্রয় স্থল।