মরার আগে মরে যান
তাহলেই বেচে যাবেন।
বুঝলেন না ? তাহলে একটা ঘটনা দিয়ে বুঝিয়ে বলি।
এক সওদাগর মনস্থির করলো হিন্দুস্থানে যাবে বাজার সদাই করতে। তো সে তার বউকে বলল- “বউ হিন্দুস্থানে যাব অনেক বাজার সদাই করব, আসার সময় তোমার জন্য কি আনব ?” বউ তার যা যা প্রয়োজন তাই আনতে বলল। তারপর সওদাগর তার ছেলে- মেয়েকে জিজ্ঞাস করলো কি আনবে তাদের জন্য। তারাও তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে বলল। এবার সওদাগর গেলে তার সবচেয়ে প্রিয় ময়না পাখিটির কাছে। এই ময়না পাখিটি সওদাগরের খুবই প্রিয়। তো পাখিকে বলল তোমার জন্য আনব হিন্দুস্থান থেকে ?
পাখিটি উত্তর করলো-” আমার জন্য কিছু আনতে হবে না। হিন্দুস্থানে আমার অনেক জাত ভাই-বোন (পাখি) আছে, আপনি তাদের জিজ্ঞাসা করবেন আমি কি করে এই খাচা থেকে মুক্ত হতে পারি। তারা যদি কোনো বুদ্ধি দেয় তা আমাকে জানাবেন।
সওদাগর হিন্দুস্থানে গেল এবং তার বউ ও ছেলে মেয়েদের জন্য সব কিছু কিনে তার বাড়ির দিকে রওয়ানা দিল। হঠাত তার প্রিয় পাখিটির কথা মনে পড়ল এবং সে হিন্দুস্থানে অন্য পাখি খুজতে লাগলো। একটি গাছের উপর সে দুটি পাখি দেখতে পেল। সওদাগর এই দুটি পাখিকে বলল আমার একটি পাখি আছে। সে তোমাদের কাছে জানতে চাইছে সে কিভাবে আমার খাচা থেকে বের হতে পারবে ?
প্রশ্নটি করা মাত্রই গাছে থাকা দুটি পাখি মাঠিতে লুঠিয়ে পরে মারা গেল। এটা দেখে সওদাগর খুব কষ্ঠ পেল। সে বাড়ি ফিরে এসে সবাইকে সব কিছু দিয়ে গেল তার প্রিয় পাখিটির কাছে। পাখিটি তাকে দেখা মাত্রই জিজ্ঞাস করলো আপনি কি আমার প্রশ্ন আমার জাত ভাই বা বোনদের বলেছিলেন ? সওদাগর মনে কষ্ঠ নিয়ে পুরো ঘটনা বর্ণনা করলো। পাখিটি ঘটনা শুনে সেও মাঠিতে লুঠিয়ে পরে মারা গেল। সওদাগর খুব কান্নাকটি করলো এবং তার পাখিটিকে খাচার বাইরে নিক্ষেপ করলো।
পাখিটি মাঠিতে পরার আগেই উড়ে গিয়ে একটা গাছে বসলো। সওদাগর তা দেখে অবাক। পাখিটি দেখলাম মারা গেছে কিন্তু এখন দেখি উড়ে চলে গেল। তারপর সওদাগরের সেই প্রিয় পাখিটি বলল-” হিন্দুস্থানে যে দুটি পাখি গাছ থেকে পরে মারা গেছিল আসলে তারা মারা যায়নি। বরং তারা আমাকে আপনার খাচা থেকে বের হবার পদ্ধতি শিখে দিয়েছিল যেন হঠাত করে মারা যাই। এখন থেকে আমি একদম মুক্ত।
ঘটনাটি যারা খুব ভালো করে পড়েছেন আশা করি তারা বিষয়টি বুঝতে পারছেন। আমরা যদি মরার আগেই মরে যাই মানে আমরা মরে গেছি মনে করে দুনিয়ার সব লোভ লালসা মউজ-মাস্থী থেকে নিজেকে বিরত রেখে শুধুই আল্লাহর জন্য নিজেকে সপে দিতে হবে। তাহলেই আমাদের পরকাল হবে অনাবিল সুখ ও শান্তির।
লিখেছেন: রাকিব খান