নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা দীন-ইসলাম দ্বারা এই উম্মতকে সম্মানিত করেছেন। তিনি এই দীনকে পূর্ণতা দিয়েছেন এবং মানুষের জন্য একমাত্র বিধানরূপে সাব্যস্ত করেছেন। যারা এই দীন মোতাবেক চলবে তাদেরকে তিনি এমন উত্তম বদলা ও মনোমুগ্ধকর বাসস্থান দান করবেন, যা প্রতিটি হৃদয় কামনা করে এবং যা দেখে প্রতিটি চক্ষু শীতল হবে।
এই দীন কতিপয় মজবুত ও শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো নামাজ। নামাজ ইসলামের খুঁটি এবং ঈমানের পর অতি গুরুত্বপূর্ণ রুকন। যারা সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অসংখ্য পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন। হাদীসে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এক নামাজের পর আরেক নামাজ, এ দুয়ের মধ্যখানে কোনো অনর্থক কাজকর্ম না হলে, তা ঊর্ধ্বজগতে লিখা হয় (আবু দাউদ, হাসান)।
অন্য এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নামাজ সর্বোত্তম বিষয়। অতএব যে চায় সে যেন তা বাড়িয়ে নেয় (তাবারানী, হাসান)।
নামাজ কল্যাণের আধার। তাই যারা কল্যাণপ্রার্থী, যারা কল্যাণের পাল্লা ভারী করতে চায়, তাদের উচিত নামাজকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরা। নামাজ আদায়কে জীবনের অন্যতম মিশন হিসেবে গ্রহন করা।
মুমিন কখনো নামাজে অবহেলা করতে পারে না। ইরশাদ হয়েছে:حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَى وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِين ‘তোমরা সমস্ত নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের প্রতি’ (সূরা বাকারা : ২৩৮)।
আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার কাছে সবচে’ প্রিয় জিনিস হলো, নারী ও সুগন্ধি। আর আমার চোখের শীতলতা নামাজের মধ্যে নিহিত’ (বুখারী)।
নামাজ প্রথম ইবাদত যা বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলা ফরয করেছেন এবং নামাজের ব্যাপারেই কিয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম হিসাব নেয়া হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকালের সময় উম্মতকে যে সর্বশেষ অসিয়ত করে গেছেন, তা হল নামাজ। মানুষের ইবাদত বন্দেগীর তালিকা থেকে সর্বশেষে বিলুপ্ত হবে নামাজ। আর নামাজ বিলুপ্ত হলে দীনচর্চার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
নামাজ মানুষকে অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে দূরে রাখে। নামাজ সমাজকে সকল প্রকার অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বাঁচায় । ইরশাদ হয়েছে: إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ‘নিশ্চয় নামাজ যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লীল-অপকর্ম থেকে বিরত রাখে’ (সূরা আনকাবুত: ৪৫)।
নামাজ এমন একটি ইবাদত যা সপ্তাকাশের উপরে জিবরীল (আ)-এর মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি ফরয হয়েছে। নামাজ আল্লাহ ও বান্দার মাঝে এক সেতুবন্ধন ।নামাজে ধীরস্থিরতা, খুশু ও বিনয় নম্রতা অবলম্বন করার গুরুত্ব এখান থেকেও বুঝা যায় যে, মুমিনদের মধ্যে যারা খুশুর সাথে নামাজ আদায় করেন তাদের সফলকাম হওয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সাক্ষী দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ . الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ . إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ . فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ . ‘মুমিনগণ অবশ্যই সফলকাম হয়েছে। যারা নিজেদের নামাজে বিনয়-নম্র। যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত।যারা যাকাত প্রদানে সক্রিয় এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ছাড়া এতে তারা তিরস্কৃত হবে না। অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমালংঘনকারী। আর যারা আমানাত ও অঙ্গীকার রা করে। যারা তাদের নামাজসমূহে যতœবান থাকে।তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে; তাঁরা ফিরদাওসের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে’ (সূরা মুমিনূন : ১-১১)।
بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن ِالْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر ِالحْكِيْمِ, أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو َالْغَفُور ُالرَّحِيْمْ
নামাজের কোন স্থানে হাত বাধব
নামাযে নাভীর নিচে হাত বাঁধা