আমি জ্বিন এবং মানব সৃষ্টি করেছি শুধুই আমার ইবাদত করার জন্য। [৫১ঃ৫৬]
এই আয়াতটি নিয়ে আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, এখানে আল্লাহ্ বলছেন – তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা শুধুই তাঁর ইবাদত করি অর্থাৎ শুধুই নামায পড়ি, রোযা রাখি, যাকাত দেই ইত্যাদি এবং অন্য কোনো কাজ না করি। ধর্মীয় কাজগুলো করাই হচ্ছে ইবাদত, বাকি সব ফালতু কাজ। ব্যপারটা তা নয়। ইবাদত শব্দটি এসেছে আ’বদ عبد থেকে যার অর্থ দাস। আমরা শুধুই আল্লাহ্র উপাসনা করি না, বরং আমরা আল্লাহ্র দাসত্ব করি। আল্লাহ্ যেটা করতে বলেছেন, সেটা করা এবং যেটা করতে মানা করেছেন, সেটা না করা হচ্ছে ইবাদত।
আল্লাহ্ মানুষ এবং জ্বিন সৃষ্টি করেছেন যেন তারা আল্লাহ্ যা বলেছেন সেগুলো করে এবং যেটা করতে মানা করেছেন সেটা না করে। এমনটি নয় যে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়লাম, রোযা রাখলাম, যাকাত দিলাম – ব্যাস, আল্লাহ্র সাথে আমাদের সম্পর্ক শেষ। এরপর আমি যা খুশি তাই করতে পারি। বরং আমরা সবসময় আল্লাহ্র দাস। ঘুম থেকে উঠার পর থেকে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটা কাজে, প্রতিটা কথায় আমাদেরকে মনে রাখতে হবে – আমরা আল্লাহ্র দাস এবং আমরা যে কাজটা করছি, যে কথাগুলো বলছি, তাতে আমাদের প্রভু সম্মতি দিবেন কিনা এবং প্রভুর কাছে আমি জবাব দিতে পারবো কি না।
এরকম মানুষ দেখেছেন যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে গিয়ে পড়ে, কিন্তু ব্যাংকের একাউন্ট থেকে সুদ খায়, সুদের লোণ নিয়ে বাড়ি কিনে, কাউকে ভিক্ষা দেবার সময় বা মসজিদে দান করার সময় মানিব্যাগে সবচেয়ে ছোট নোটটা খোঁজে ? বা এরকম মানুষ দেখেছেন যে হজ্জ করেছে, বিরাট দাড়ি রেখেছে কিন্তু বাসায় তার স্ত্রী, সন্তানদের সাথে ধমক না দিয়ে কথা বলতে পারে না? এরা আল্লাহর আবদ্ নয়। এরা আল্লাহ্র ইবাদত করছে না। এরা শুধুই উপাসনা করছে। উপাসনার বাইরে আল্লাহ্র প্রতি নিজেকে সমর্পণ করে দিয়ে আল্লাহ্র আবদ্ হয়ে তাঁর ইবাদত করতে এখনও বাকি আছে।