অনেকে শবে বরাত সম্পর্কিত কিছু হাদীসকে দ্বয়ীফ বলে শবে বরাতকে বিদায়ত বলে থাকেন। দ্বয়ীফ হাদীছের ব্যাপারে নিচে আলোচনা করা হলঃ
দ্বয়ীফ হাদীছঃ
যে হাদীছের রাবী হাসান হাদীছের রাবীর গুণ সম্পন্ন নন তাকে দ্বয়ীফ হাদীস বলা হয়।
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কথাই দ্বয়ীফ নয় বরং রাবীর দুর্বলতার কারণে হাদীছকে দ্বয়ীফ বলা হয়।
দ্বয়ীফ হাদীসের দুর্বলতার কম বা বেশী হতে পারে। কম দুর্বলতা হাসানের নিকটবর্ত্তী আর বেশি হতে হতে মওজুতে পরিণত হতে পারে। এ ধরনের হাদীছ আমলে উৎসাহিত করার জন্য বর্ণনা করা যেতে পররে বা করা উচিৎ। তবে আইন প্রণয়নে গ্রহনযোগ্য নয়।
এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম ইবনে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“দ্বয়ীফ হাদীছ যা মওজু নয় তা ফজিলতের আমল সমূহে গ্রহণযোগ্য”
(ফতহুল ক্বাদীর)
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বিহ হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“সকলেই একমত যে দ্বয়ীফ হাদীছ ফজিলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে।”
(আল মওজুআতুল কবীর, ১০৮ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত হল যে, দ্বয়ীফ হাদীছ ফজিলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে। তবে দ্বয়ীফ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত সকল আমল মুস্তাহাব।
যেমনঃ আল্লামা ইব্রাহিম হালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর গুলিয়াতুল মুস্তামালী ফি শরহে মুনিয়াতুল মুছাল্লি কিতাবে উল্লেখ করেছেন,
“গোসলের পরে রূমাল (কাপড়) দিয়ে শরীর মোছা মুস্তাহাব। হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত আছে – আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটুকরা কাপড় (রূমাল) ছিল যা দিয়ে তিনি অযুর পরে শরীর মুবারক মুছতেন” (তিরমিযি শরীফ)
এটা দ্বয়ীফ হাদীছ। কিন্তু ফজিলত হাসিল করার জন্য আমল করা যাবে।
হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর আল মওজুআতুল কবীরের ১০৮ পৃষ্ঠায় বলেন,
“সকলে একমত যে দ্বয়ীফ হাদীছ ফজিলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে। এজন্য আমাদের আইম্মায়ি কিরামগণ বলেছেন, অযুর মধ্যে গর্দান মসেহ্ করা মুস্তাহাব।”
তার মানে অযুর মধ্যে গর্দান মসেহ্ করা -এটি দ্বয়ীফ হাদীছ।
সুতরাং যারা শবে বরাতের হাদীস সংক্রান্ত কিছু দলিলকে দ্বয়ীফ হাদীছ বলে শবে বরাত পালন করা বিদায়াত বলে তাদের এধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভূল।
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকেে সমস্থ বাতিল ও গোরাহি মতবাদ থেকে বিরত রেখে এ মোবারকময় রাত্রে ইবাদত বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমীন